আনোয়ার হোসেন: | শুক্রবার, ১২ জুলাই ২০২৪ | প্রিন্ট | 65 বার পঠিত
গাইবান্ধার নদ-নদীতে পানি কমতে শুরু করেছে। গত সোম ও মঙ্গলবার পানি কিছুটা কমলেও টানা বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা ঢলে গত বুধবার থেকে আবারও বন্যার পানি বাড়তে শুরু করে এবং গতকাল শুক্রবার সকাল থেকেই ব্রাহ্মপুত্র, যমুনা, ঘাঘট, করতোয়া ও তিস্তা নদীর পানি কমতে থাকায় বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে।
তবে এখনো চার উপজেলার নিম্নঞ্চলের বাড়ী ঘরসহ জমিতে পানি থাকায় ভানবাসী মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় জেলার কৃষি ও মৎস্য খাতে বিপর্যয়ের শঙ্কা করা হচ্ছে।
জেলা পাউবো কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত ফুলছড়ি পয়েন্টে ব্রাহ্মপুত্রের পানি ১২ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৩২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সাঘাটায় যমুনার পানি বিপৎসীমার ৩২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শহরের নিউ ব্রিজ স্টেশনে ঘাঘট নদীর পানি বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও গত ২৪ ঘন্টায় পানির উচ্চতা ১১ সেন্টিমিটার কমেছে। এছাড়া তিস্তার পানি ও করতোয়ার পানি বিপৎসীমার নিচে থাকলেও গত ২৪ ঘন্টায় পানির উচ্চতা কমেছে।
দু’দফা বন্যায় দীর্ঘদিন পানিতে তলিয়ে থাকায় জেলার প্রধান অর্থকরী ফসল পাটের খেত নষ্ট হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এছাড়া রোপা আমন, তিল, কালাই, বাদাম, ভুট্রাসহ অন্যান্য ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষক।
গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ খোরশেদ আলম জানান, বন্যায় জেলার ৬ হাজার ৪৩৬ হেক্টর জমি পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। এরমধ্যে ৩ হাজার ৯৭৩ হেক্টর জমির ফসল পুরোপুরি নষ্ট হতে পারে। এতে ৬৬ হাজার ৮৬৯ জন কৃষক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। প্রাথমিকভাবে কৃষকের ৭৬ কোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হলে এই ক্ষয়ক্ষতির পরিমান আরও বাড়তে পারে।
জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মাহফুজুর রহমান বলেন, বন্যার কারণে এখন পর্যন্ত প্রায় ২০ লাখ গবাদি পশু ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। খামারিদের জন্য ১৮টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। এছাড়া বন্যা কবলিত এলাকায় গবাদি পশুর জন্য রুচি বর্ধক ঔষধ, স্যালাইন ও ভিটামিন ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মারজান রহমান বলেন, বন্যায় এখন পর্যন্ত গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলায় ৯৬ দশমিক ৪৭ হেক্টর আয়তনের ৪৫৭টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এতে ৪ কোটি ৬৩ লাখ ২২ হাজার টাকা মূল্যের বড় মাছ, ২৯ লাখ ৭৪ হাজার টাকার পোনামাছ ও ৩৪ লাখ ৯৫ হাজার টাকা মূল্যের অবকাঠামোর ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। সবমিলিয়ে এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত মৎসচাষিদের প্রণোদনা দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট প্রস্তাবনা পাঠানো হবে বলে জানান।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ হাফিজুল হক বলেন, গাইবান্ধায় নদ-নদীর পানি আবারও কিছুটা বেড়েছে। ভাঙ্গন রোধসহ বন্যা কবলিতদের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে পাউবোর।
গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক কাজি নাহিদ রসুল বলেন, বানভাসীদের মাঝে শুকনা খাবার ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে। তাদের মাঝে নগদ অর্থ বিতরণ করার পাশাপাশি সার্বিক খোঁজ, খবর নেওয়া হচ্ছে।
Posted ৫:২৪ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ১২ জুলাই ২০২৪
bangladoinik.com | Belal Hossain
জে এস ফুজিয়ামা ইন্টারন্যাশনালের একটি প্রতিষ্ঠান। ভ্রাতৃপ্রতিম নিউজ - newss24.com