ডেস্ক রিপোর্ট | বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | প্রিন্ট | 83 বার পঠিত
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকেই পদত্যাগ করতে হয়েছে। ব্যতিক্রম নয় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ও। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মইনের পদত্যাগের পর দীর্ঘদিন ধরে খালি আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদটি। নতুন উপাচার্য হওয়ার দৌড়ে নাম শোনা যাচ্ছে মার্কেটিং বিভাগের বিতর্কিত শিক্ষক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মানের।
আওয়ামী লীগের সময় নানা সময় সুবিধাভোগী এই শিক্ষক বেশ বদলে এখন নিজেকে বৈষম্যের শিকার দাবি করে চালিয়ে যাচ্ছেন উপাচার্য হওয়ার জন্য লবিং। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দাবি একজন নিরপেক্ষ শিক্ষককেউপাচার্য হিসেবে চান। সেখানে অধ্যাপক সোলায়মান উপাচার্য আসলে ক্যাম্পাসে পড়ালেখার পরিবেশ নষ্ট হবে বলে ধারণা করছে শিক্ষার্থীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অধ্যাপক সোলায়মান শিক্ষকতার শুরু থেকে আজ পর্যন্ত নানা সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা দল থেকে শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে।তবে তিনি আওয়ামীলীগ শাসন আমলের ১৬ বছর কখনো জমায়েত ইসলামীর রোকন পদে আছেন বলে পরিচয় দিয়েছেন আবার কখনো বিএনপির রাজনীতির সাথে বলে পরিচয় দিয়েছে। ২০২০ সালে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী থেকে ভেঙে বের হয়ে যাওয়া নেতাকর্মীদের নিয়ে গঠিত এবি পার্টির লোক বলেও ক্যাম্পাসে ফলাও করে প্রচার করেছেন।সর্বশেষ তিনি বহুরূপী সোলায়মান চেষ্টা করেছেন একজন আওয়ামীলীগের সমর্থক হিসেবে নিজের প্রতিচ্ছবি দাঁড় করানোর জন্য।
কিন্তু গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের পর ভোল পাল্টে ফেলেন অধ্যাপক সোলায়মান। তিনি নিজেকে একজন জামায়াত ইসলামীর নেতা হিসেবে নানাভাবে প্রচার করতে থাকেন। শুধু তাই নয়,সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে মুছে ফেলেন আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের সাথে তোলা তার নানা সময়কার ছবি। তবে এই সংবাদের স্বার্থে সেসব ছবি ও তার ফেসবুকে থাকার প্রমান স্ক্রিনশট আকারে সংরক্ষিত আছে প্রতিবেদকের কাছে।
একটি ছবিতে দেখা যায়, বুড়িচং-এর ষোলনল ইউনিয়নের আওয়ামিলীগের চেয়ারম্যান বিল্লালের প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে পরিচিত কুবির এই অধ্যাপক। একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার সময় বিল্লালের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন তিনি।
আবার আরেকটি ছবিতে দেখা যায়, দক্ষিণ দক্ষিণ জেলা আওমিলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকসাজ্জাদ হোসেন, ছাত্রলীগের সোহাগ – নাজমুল কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এহতেসামুল হাসান রুমীর সাথেও রয়েছে তার আতাত।সর্বশেষ আওয়ামীলীগের এমপি এডভোকেট এম এ হাসেম প্রহসনমূলক নির্বাচনে জয়ের পুর ফুলেল শুভেচ্ছা জানান এই সোলায়মান।
নানা সময় নানা রাজনৈতিক দলের ব্যানারে হাজির হওয়া এই শিক্ষকের ব্যাপারে শিক্ষার্থীরাও অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিভাগটির শিক্ষার্থীরাও।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী জানান, নির্দিষ্ট সংখ্যক ক্লাস নেয়া ছাড়াই কোর্স শেষ করেন তিনি। এছাড়া পছন্দের শিক্ষার্থীদের বেশি নম্বর দিয়ে মেধাবীদের বঞ্চিত করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। আকরাম হোসেন নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, অধ্যাপক সোলায়মানের কারণে বিভাগে এতদিন কথা বলা যেত না। সকল শিক্ষার্থীকে ইনকোর্সের ভয় দেখিয়ে মুখ বন্ধ করে রাখতো।
এভাবেই তিনি সকল অন্যায় করে গেছেন। টাকা খেয়ে নিয়োগ দিয়েছেন ভুঁড়ি ভুঁড়ি। ইভেনিং এমবিএ’র পিডি থাকা অবস্থায় নিয়ম বহির্ভূতভাবে করেছেন ভর্তি বাণিজ্য। বৈষম্যহীন বাংলাদেশে উপদেষ্টারা যেন তাকে বৈষম্য তৈরি করতে এখানে উপাচার্য হিসেবে না পাঠায়।
আয়েশা আক্তার নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘তিনি তার পছন্দের শিক্ষার্থীদের নানা মেকানিজম করে ফার্স্ট বানান। তারপর চাকির দেয়ান। এমন লোক ভিসি হিসেবে আসুক তা চাই না। গত ১৬ বছরে তিনি যেসব অনিয়ম করেছেন সেগুলোর আগে বিচার চাই।
সার্বিক অভিযোগের ব্যাপারে অধ্যাপক সোলায়মানকে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি ফোন ধরে একাধিকবার কেটে দেন। পরবর্তীতে ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও তিনি যোগাযোগ করেননি।
Posted ৪:০৭ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
bangladoinik.com | Belal Hossain
জে এস ফুজিয়ামা ইন্টারন্যাশনালের একটি প্রতিষ্ঠান। ভ্রাতৃপ্রতিম নিউজ - newss24.com