শুক্রবার ১১ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৬শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

গাইবান্ধা শহরে অসহনীয় যানজটে চরম ভোগান্তি

আনোয়ার হোসেন   |   সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪   |   প্রিন্ট   |   28 বার পঠিত

গাইবান্ধা শহরে অসহনীয় যানজটে চরম ভোগান্তি

সুমন মিয়া একজন অটোরিকশা চালক। বাড়ি গাইবান্ধা সদর উপজেলার চাপাদহ গ্রামে। প্রতিদিন জেলা শহরে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালান। তিনি জানালেন, ‘প্রতিদিন রাতে ব্যাটারি চার্জ দিই, দিনে অটোরিকশা চালাই। সারা রাত চার্জ দিয়ে সারা দিন অটোরিকশা চালানো যায়। কোনো সমস্যা হয় না।

কিন্তু যানজটের কারণে হাঁপিয়ে উঠেছি। ৫ মিনিট চালালে ২০ মিনিটই জ্যামে (যানজটে) আটকে থাকতে হয়। দুপুরের পরই ব্যাটারি চার্জ শেষ হয়ে যায়।’ গত বৃহস্পতিবার গাইবান্ধা শহরে ২০ জন অটোরিকশা চালকের সঙ্গে কথা বলে যানজটের এই ভয়াবহ অবস্থার কথা জানা যায়।

গাইবান্ধা শহরের কয়েকজন বাসিন্দা ও অটোরিকশা চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মূলত তিন কারণে গাইবান্ধা শহরে যানজট বেড়েছে। এগুলো হচ্ছে অতিরিক্ত সংখ্যক অটোরিকশা চলাচল, যততত্র অটোরিকশা রেখে যাত্রী ওঠা নামা করা এবং বিশৃঙ্খলভাবে অটোরিকশা চলাচল।

এসব কারণে জেলা শহরের ব্যস্ততম ডিবি রোড, বালাসি রোড়, ব্রিজ রোড এবং প্রধান ডাকঘর-সংলগ্ন রোডে সব সময় যানজট লেগেই থাকে। যানজটের কারণে ভোগান্তি পোহাচ্ছে কয়েক লাখ মানুষ। গাইবান্ধা জেলা শহরে কতগুলো অটোরিকশা চলাচল করে, সে হিসাব গাইবান্ধা পৌরসভা কার্যালয়ে নেই। তবে পুলিশ, অটোরিকশা চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিদিন জেলা শহরে চার হাজারের বেশি অটোরিকশা চলাচল করে।

এর মধ্যে অধিকাংশেরই নিবন্ধন নেই। এ ছাড়া শহরে তিন হাজার ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ভ্যান চলাচল করে। জেলা রিকশা ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওয়াশিম আলম বলেন, গাইবান্ধা শহরের যানজট সমস্যার সমাধানে দিনরাত দুই পালায় অটোরিকশা চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে।

যাঁরা দিনে চালাবেন, তাঁরা রাতে চালাতে পারবেন না। এতে যানজট অনেকটা কমবে। বৃহস্পতিবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা গেছে, শহরের ব্যস্ততম সড়কের পাশে ট্রাক, অটোরিকশা দাঁড়িয়ে আছে। বিভিন্ন মোড়ে আটকে আছে ব্যাটারি চালিত রিকশা ও ভ্যান। ফলে কিছুক্ষণ পরপর সড়কে তীব্র যানজট তৈরি হচ্ছে।

দুইপাশে যত্রতত্র যানবাহন রেখে বিভিন্ন সড়ক সংকুচিত হচ্ছে। ব্যবসায়ী নুর মোহাম্মদ জানান, রিকশায় উঠলেই খারাপ লাগে। যানজটে অতিষ্ঠ হয়ে উঠি। তিনি বলেন, গত ৫ আগস্টের পর কিছুদিন ছাত্ররা ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করে। তখন শহরের অবস্থা ভালো ছিল। এখন ট্রাফিক পুলিশ থাকলেও যানজট কমছে না।

শহরের ব্রিজ রোডের বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক মুকুল মিয়া বলেন, উত্তর দিক থেকে গাইবান্ধা সদর ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার প্রায় ২০টি ইউনিয়নের আট লক্ষাধিক মানুষ শহরে প্রবেশ করেন। ফলে এ রোডে দিনরাত যানজট লেগেই থাকে। একই রোডের রিকশাচালক বাবু মিয়া (৫৫) নিজের ভাষায় বললেন, ‘পোত্তেকদিন (প্রতি দিন) বিরিজ রোডেজত জাম নাগি থাকে। জামের জন্নে ভাড়া কমি গ্যাচে।’ শহরের পুরাতন বাজারের ব্যবসায়ী এমদাদুল হক(৬৫) জানালেন, সড়ক ঘেঁষে দোকান। দিন- রাত অসংখ্য যানবাহন চলাচল করে। শব্দদূষণে কান জ্বালাপোড়া করে।

শহরের ব্যাটারিচালিত এ অটোরিকশা নির্দিষ্ট রঙের মাধ্যমে চিহ্নিত করতে হবে। চিহ্নিত অটোরিকশা কেবল শহরে চলাচল করবে। শহীদ আহমেদ, প্যানেল মেয়র, গাইবান্ধা পৌরসভা প্যানেল মেয়র শহীদ আহমেদ জানান, এ ক্ষেত্রে পৌরসভার নিবন্ধন করা অটোরিকশা ও রিকশা চিহ্নিত করা দরকার। এতে বাইরের অটোরিকশা শহরে ঢুকতে পারবে না। তখন যানবাহন নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশের কাজ করতে সুবিধা হবে।

বিষয়টি একাধিকবার পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তাঁরা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। গাইবান্ধা পৌরসভার প্যানেল মেয়র শহীদ আহমেদ বলেন, যানজট নিরসনে পৌরসভা থেকে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। শহরের ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা একটি নিদিষ্ট রঙের মাধ্যমে চিহ্নিত করা হবে।

চিহ্নিত অটোরিকশা কেবল শহরে চলাচল করবে। এতে যানজট অনেকটা কমে যাবে। দিনে রাতে পালা করে চলাচল করবে। তিনি আরও বলেন,’এক রঙের অটোরিকশা রাতে, আরেক রঙের অটোরিকশা দিনে চলবে। এতে যানজট কমবে। তিনি দাবি করেন, শহরে চলাচল করে এমন তিন হাজারের বেশি অটোরিকশা এবং ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ভ্যানের নিবন্ধন রয়েছে। যে গুলোর নিবন্ধন নেই সে গুলোর নিবন্ধনের আওতায় আনার প্রস্তুতি চলছে।

Facebook Comments Box

Posted ২:৪১ অপরাহ্ণ | সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

bangladoinik.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

https://prothomalo.com
https://prothomalo.com

এ বিভাগের আরও খবর

https://prothomalo.com
https://prothomalo.com
সম্পাদক ও প্রকাশক
ফখরুল ইসলাম
সহসম্পাদক
মো: মাজহারুল ইসলাম
Address

2nd floor, Opposite building of Muradnagar Thana gate, Muradnagar-3540, Bangladesh

01941702035, 01917142520

bangladoinik@gmail.com

জে এস ফুজিয়ামা ইন্টারন্যাশনালের একটি প্রতিষ্ঠান। ভ্রাতৃপ্রতিম নিউজ - newss24.com