শনিবার ২২শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

নীলফামারীতে তীব্র শীতে বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ

সোহাগ ইসলাম নীলফামারী   |   শুক্রবার, ১২ জানুয়ারি ২০২৪   |   প্রিন্ট   |   523 বার পঠিত

নীলফামারীতে তীব্র শীতে বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ

ঘন কুয়াশা, হিমশীতল বাতাস আর হাড় কাঁপানো কনকনে ঠান্ডায় উত্তরের জেলা নীলফামারীর জনজীবন কাহিল হয়ে পড়েছে। রাত থেকে শুরু করে সকাল ১০টা পর্যন্ত বৃষ্টির ফোঁটার মতো শিশির পড়ছে। পাঁচ দিন ধরে দেখা মিলছে না সূর্যের। রাত থেকে দুপুর পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন থাকছে। দিনের বেলায়ও যানবাহনকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে হচ্ছে। আকাশপথেও বিমান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।

শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় নীলফামারীর সৈয়দপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লোকমান হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, উত্তরের হিমেল হাওয়া ও ঘন কুয়াশার কারণে শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হচ্ছে। সৈয়দপুরে সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরকম তাপমাত্রা আরও কয়েক দিন এমন থাকবে। সৈয়দপুরের আকাশে ঘন কুয়াশা বিরাজ করছে। এই ঘন কুয়াশা দুপুর পর্যন্ত থাকতে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে প্রায় প্রতিদিনই সৈয়দপুর বিমানবন্দরে বিমান ওঠানামায় বিঘ্ন ঘটছে।

এদিকে রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় কাছাকাছি হওয়ায় দিনের চেয়ে রাতে অনেক বেশি ঠান্ডা বেশি অনুভূত হচ্ছে। মানুষ আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। প্রচণ্ড শীতে কাজে বের হতে গিয়ে বেকায়দায় পড়ছেন শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষ। ঠান্ডা বাতাসে ঘরে থাকা দায় হয়ে পড়েছে চরাঞ্চলের মানুষদের। ঘন কুয়াশা আর ঠান্ডায় নষ্ট হচ্ছে ধানের বীজতলা ও আলুখেত। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। ঠান্ডায় কষ্ট পাচ্ছে গরু-ছাগল। প্রাণীগুলোর শীতজনিত রোগের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সকালে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রাতভর পড়া কুয়াশায় ভিজে গেছে পিচঢালা পথগুলো। গাছের পাতা, ফসলের খেত আর ঘাসের ওপর থেকে টপটপ করে পড়ছে শিশিরবিন্দু। ঘন কুয়াশার কারণে সকালে সড়কের যানবাহনগুলো চলছে হেডলাইট জ্বালিয়ে। কুয়াশার মধ্যেই গায়ে শীতের কাপড় জড়িয়ে কর্মজীবী মানুষ ছুটছে কাজের সন্ধানে।

শহরের চৌরঙ্গী মোড় এলাকায় কথা হয় ইজিবাইকচালক এমদাদুল হকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ঘন কুয়াশা আর ঠান্ডা বাতাসে মানুষ ঘর থেকে বাইরে বের হচ্ছে না। গত কয়েক দিন ধরে সারাদিন ঘুরে ২০০ টাকাও ভাড়া পাইনি। আগে দিনে সাত থেকে আট শ টাকা আয় হতো অটো চালিয়ে। এখন অর্ধেক টাকাও আয় হয় না। খুব কষ্টে দিন যাচ্ছে, একদিকে আয় কম অন্যদিকে বাজারের সব জিনিসের দাম বেশি।

কান্দুরা মামুদ নামের আরেকজন ইজিবাইকচালক বলেন, ‘চার দিন থাকি ঠান্ডা খুব বেশি হইছে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কুয়াশাত আস্তা দেখা যায়ছে না। লাইট জ্বালে জানটা হাতোত নিয়া পাকার রাস্তা দিয়া গাড়ি চালাইছি। বিকেল ৪টার পর ঘন কুয়াশা শুরু হয়। সন্ধ্যা হইলে লাইট জ্বালেও কিছুই দেখা যায় না।’

তিস্তা নদীঘেঁষা খগার চরের বাসিন্দা গৃহবধূ আকলিমা বেগম বলেন, ‘কষ্টের কথা কি আর কমু, ঠান্ডায় আমাগো জীবন যায় যায়। হারা রাইত নদী থাইকা হু হু কইরা ঠান্ডা বাতাস ঘরে ঢোহে। শরীর বরফ হওয়া যায়। ঠান্ডাতে হাত পাও অবশ নাগে। সকাল সইন্ধ্যা ঝরঝর কইরা কুয়াশা পড়তাছে।’

এদিকে ঠান্ডা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শীতজনিত রোগে আক্রান্তের হার বেড়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপও বেড়েছে।

নীলফামারীর সিভিল সার্জন ডা. মো. হাসিবুর রহমান বলেন, শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এ সময় চলাফেরায় সবাইকে সাবধান হতে হবে, বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের ঠান্ডা লাগানো একেবারেই যাবে না।

নীলফামারীর জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ বলেন, শীত মোকাবিলায় পর্যাপ্ত সরকারি সহায়তা প্রস্তুত রয়েছে। শীতবস্ত্র হিসেবে জেলার ৬ উপজেলা ও চার পৌরসভায় ৪০ হাজার পিস কম্বল পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখনো প্রায় ১০ হাজার মজুদ আছে। প্রয়োজনে আরও চাহিদা দেওয়া হবে।

Facebook Comments Box

Posted ১:২৪ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ১২ জানুয়ারি ২০২৪

bangladoinik.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

https://prothomalo.com
https://prothomalo.com

এ বিভাগের আরও খবর

https://prothomalo.com
https://prothomalo.com
সম্পাদক ও প্রকাশক
ফখরুল ইসলাম
সহসম্পাদক
মো: মাজহারুল ইসলাম
Address

2nd floor, Opposite building of Muradnagar Thana gate, Muradnagar-3540, Bangladesh

01941702035, 01917142520

bangladoinik@gmail.com

জে এস ফুজিয়ামা ইন্টারন্যাশনালের একটি প্রতিষ্ঠান। ভ্রাতৃপ্রতিম নিউজ - newss24.com