
মো.পাপুল সরকার,গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ | রবিবার, ২১ জানুয়ারি ২০২৪ | প্রিন্ট | 330 বার পঠিত
গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার হরিনাবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র যেন সবুজ ফসলের মাঠ।
তদন্ত কেন্দ্রের আঙ্গিনায় পতিত জায়গায় শুধু প্রাকৃতিক জৈব সার ব্যবহার করে বিষমুক্ত সবজি বাগান করে চমকে দিয়েছেন তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ। তিনি পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি নিজের হাতে সবজি বাগান পরিচর্চা করে প্রশংসিত হচ্ছেন সর্বমহলে।
ফরমালিন মুক্ত সবজির চাহিদা মেটাতে তদন্ত কেন্দ্রের পতিত জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ গাছ ও সবজি চাষে পাল্টে গেছে তদন্ত কেন্দ্রের দৃশ্যপট। কিছুদিন আগেও যে জায়গাগুলো ছিল ঘন জঙ্গলে মোড়ানো,সেখানে জায়গা করে নিয়েছে সবুজ শাক-সবজি। চিরচেনা এ সবুজ দৃশ্য তদন্ত কেন্দ্রে সেবা নিতে আসা মানুষের নজর কেড়েছে।
এখানে চাষ করা হয়েছে,আলু,পিঁয়াজ,মরিচ,বেগুন,টমেটো,আদা,লাউ,শিম,বরবটি,গাজর,বাঁধাকপি,ফুলকপিসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফলের মধ্যে রয়েছে আম, বারি মাল্টা, বল সুন্দরী বরই,আপেল কুল,সুপারি গাছ,নারিকেল গাছ,সূর্যমূখি ফুলের বাগানসহ অনেক ফলজ গাছ।
তদন্ত কেন্দ্রের সীমানা প্রাচীরের পাশে সারি সারি ভাবে রোপন করা হয়েছে সুপারি গাছ যা তদন্ত কেন্দ্রের নান্দনিক সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে কয়েকগুন।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়,চারিদিকে ইট পাথরে ঘেরা চত্বর এখন সবুজ ফসলের মাঠ। সেখানে গাছে গাছে ঝুঁলছে শীম,টমেটো,বেগুন,ঢেঁড়স,মিষ্টি কুমড়া,বাঁধা কপি,ফুলকপি,লাউ,লালশাক,আদা,রসুন,পিঁয়াজ,আলু,ধনিয়া,পুঁইশাক,কলমি শাক,পেঁপেসহ নানা রকমের সবজি।
বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা বাড়ীর আঙ্গিনাসহ পতিত জমি যেন এক ইঞ্চিও খালি পরে না থাকে। তারই অংশ হিসেবে হরিনাবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জের এমন উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়।
তদন্ত কেন্দ্রে আসা সাধারণ সেবা প্রত্যাশীরা ঘুরে ঘুরে উপভোগ করেন এসব সবজির বাগানগুলো। অনেকেই বলেছেন,এটি একটি ভালো মন মানসিকতার উদাহরণ। তাদের ভাষায়,ভালো মন মানসিকতা না থাকলে এরকম উদ্যোগ গ্রহণ করা কখনই সম্ভব নয়। যেকারণে এর উদ্যোক্তা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জের ভূয়সী প্রশংসা করেন সাধারণ মানুষ। পাশাপাশি এমন উদ্যোগ গ্রহণ করায় তাকে সাধুবাদ জানান।
কথা হয় উক্ত তদন্ত কেন্দ্রের এক পুলিশ সদস্যের সঙ্গে। তিনি বলেন, স্যার যোগদানের পর তদন্ত কেন্দ্রের চারিদিকে ঝোপ জঙ্গল পরিস্কার করে থানা কমপাউন্ডের সামনে থেকে সবজি চাষ ও মিশ্র ফলজ গাছের চারা রোপনে বদলে গেছে হরিনাবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের দৃশ্যপট।
এখানকার অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা জানান, সবজি বাগানের সামনে দাঁড়ালে মনে হয় নিজের বাড়ীতেই রয়েছি। স্যারের আন্তরিকতায় থানার আঙ্গিনায় সবজি চাষ ও মিশ্র ফলজ বাগান গড়ে উঠেছে। আমরা পুলিশ সদস্যরা নিজেদের হাতেই সবজি বাগান থেকে লাউ,শাক,কুমড়া,আদা,রসুন,পিঁয়াজ,লালশাক তুলে খাই। এসব বিষ মুক্ত সবজি খাওয়ার যে স্বাদ সেটা সবাই উপভোগ করি।
যদিওবা সরেজমিনে তদন্ত কেন্দ্রে গিয়ে ইনচার্জের সঙ্গে দেখা হয়নি। সেদিন হয়ত তিনি পেশাগত কাজে বাহিরে ছিলেন।একারণে তদন্ত কেন্দ্রের আঙ্গিনায় সবজি চাষ সম্পর্কে তার মতামত জানতে সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য,স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ম্মারক নং-তদন্ত-৯৯/২০০০(পুঃ-৩)৮৭০, ২০০১ সালের নভেম্বর মাসের ২৬ তারিখে গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার ৭ নং পবনাপুর,৮ নং মনোহরপুর ও ৯ নং হরিনাথপুর এই তিনটি ইউনিয়নের সমন্বয়ে হরিণাবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র স্থাপিত হয়। পলাশবাড়ী উপজেলার ৯ নং হরিনাথপুর ইউনিয়নের অন্তর্গত হরিণাবাড়ী মৌজার জেএল নং-৭৮,খতিয়ান নং-২৮৬, দাগ নং-৩৯২ হতে ০.১৬ একর ও দাগ নং-৩৯৫ হতে ১.২০ একর জমি জনৈক আলহাজ্ব মোজাম্মেল হক মিয়া কর্তৃক এবং জনৈক খলিলুর রহমান,ফজল হক,মছির উদ্দিন,আজিজুল হক,আনছার আলী ও আয়েজ উদ্দিন গং কর্তৃক ০.১০ একরসহ মোট ১.৪৬ একর জমি পুলিশ বিভাগের নামে দান রেজিষ্ট্রি মূলে এবং ১.১৫ একর জমি অধিগ্রহণ মূলে সর্বমোট ২.৬১ একর জমি হরিণাবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের নিজস্ব সম্পত্তি। অত্র হরিণাবাড়ী কেন্দ্রে সরকারিভাবে অনুমোদিত অফিসার ও ফোর্সের সংখ্যা ১ জন পুলিশ পরিদর্শক,২ জন এসআই,৩ জন এএসআই,এবং ১৬ জন কনষ্টেবল,ড্রাইভার কনষ্টেবল ১ জন,বাবুর্চি ১ জন,পরিচ্ছন্নতাকর্মী ১ জন। অত্র পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে বতর্মানে ৫ পাঁচজন কনষ্টেবল এর পদ শূন্য রয়েছে বলে পুলিশের তথ্যসূত্রে জানা যায়।#
Posted ১:২৪ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২১ জানুয়ারি ২০২৪
bangladoinik.com | Belal Hossain
জে এস ফুজিয়ামা ইন্টারন্যাশনালের একটি প্রতিষ্ঠান। ভ্রাতৃপ্রতিম নিউজ - newss24.com