মঙ্গলবার ১৪ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

চট্টগ্রাম পলিটেকনিক্যালে হামলা, জড়িত শিবির ও সমন্বয়ক-অভিযোগ ভুক্তভোগী একাংশের

  |   শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪   |   প্রিন্ট   |   82 বার পঠিত

চট্টগ্রাম পলিটেকনিক্যালে হামলা, জড়িত শিবির ও সমন্বয়ক-অভিযোগ ভুক্তভোগী একাংশের

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকাল ৩টার দিকে চট্টগ্রাম সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে আবাসিক হলের সিট বরাদ্দ নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার সাথে ছাত্রাবাসে ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। এ সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়েছে ইনস্টিটিউটির ছাত্রসহ অন্তত দশজন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের থেকে জানা যায়, ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম কলেজের সমন্বয়ক ও হাজী মোহাম্মদ মহসিন কলেজের সমন্বয়কসহ উল্লেখযোগ্য আরও অনেকে।

ঘটনার সূত্রপাত সম্পর্কে জানা যায়, ৫ই আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর থেকে চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের আবাসিক হল খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিল শিক্ষার্থীরা। এর প্রেক্ষিতে ১০ নভেম্বর কলেজ প্রশাসন হলে আসন বরাদ্দ দেওয়ার নোটিশ দেয়। ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত আবেদনের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়। ১৮ নভেম্বর ফলাফল প্রকাশ হলে ১৯ ও ২০ নভেম্বর হলে ওঠে শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীদের একটি বৃহৎ অংশ সিট বরাদ্দ নিয়ে অনিয়মের প্রতিবাদ করে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের একাংশের অভিযোগ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে শিবিরের নেতাকর্মীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির হোস্টেল দখলের চেষ্টা করছে। তাদের দাবি চট্টগ্রাম কলেজ ও মহসিন কলেজ থেকে শিবির কর্মীদের পলিটেকনিকে নিয়ে এসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে।

হামলায় আহত ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের একাংশ ইনস্টিটিউটটিতে হোস্টেলের সিট বরাদ্দে বৈষম্যের অভিযোগ তুলে গণমাধ্যমকে বলেন, “আমরা ৩:৫০ পেয়েও হোস্টেলে সিট পাচ্ছি না কিন্তু শিবির করে এমন ছেলে কম রেজাল্টেও সিট পাচ্ছে। হোস্টেলের জন্য সিট বরাদ্দের ফরম এমন ভাবে বিতরণ করা হচ্ছে যে প্রত্যেকটি ফরম পাচ্ছে কেবল শিবিরের ছেলেরা কিন্তু আমাদের একটা ছেলেও ফরম পায়নি। ফরম কেন পায়নি এই দাবি নিয়ে যখন আমরা ও আমাদের অভিভাবক স্যারদের সাথে কথা বলছে তখন তারা আমাদের বিরুদ্ধে নানা রকম পায়তারা করে ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।”

ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে তারা বলেন, “ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে চট্টগ্রাম কলেজের ও হাজী মোহাম্মদ মহসিন কলেজের সমন্বয়ক কেন আসছে? যেখানে কেন্দ্র থেকে এইখানে কোন সমন্বয়ক দেয়নি। তারা সমন্বয়কদের বেশ ধরে জামাত শিবিরের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে এবং ক্যাম্পাসে উশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করছে। আমরা এই নেক্কারজনক হামলার সুষ্ঠু বিচার চাই।”

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ঘটনার সময় তাদের উপর ইট পাটকেল নিক্ষেপসহ ধারালো অস্ত্র ছুরি ব্যবহার করে হামলা করা হয়েছিল। এ সময় ছাত্রদল হামলাকারীদের প্রতিহত করে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে বলে জানান ঘটনায় আহত শিক্ষার্থীদের একাংশ।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের সদস্য সচিব শরীফুল ইসলাম তুহিন বলেন, “চট্টগ্রাম কলেজের স্ট্যাইলে অন্যায়ভাবে শিবির পলিটেকনিক্যালেও হল দখলের চেষ্টা করছে। তারা ছাত্রলীগের মত হেলমেট পড়ে ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করেছে। খবর পেয়ে আমরা গিয়েছি। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কের আড়ালে তারা এসব করছে। অথচ ক্যাম্পাসে সকল শিক্ষার্থীর অধিকার আছে। সব সংগঠনের রাজনীতি করার অধিকার আছে। তারা সেটা মানতে চায়না।”

সংঘর্ষ চলাকালে ছাত্রশিবির বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে চট্টগ্রাম কলেজ ও মহসিন কলেজের সমন্বয়কদের নিয়ে এসেছিল বলে জানান চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের এই সদস্য সচিব। তাদেরকে বহিরাগত বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “চট্টগ্রাম কলেজ ও মহসিন কলেজের সমন্বয়কদের পলিটেকনিক্যাল কাজ কী? তারা কী ওই ক্যাম্পাসের ছাত্র নাকি?”

হামলার বিষয়ে বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবিরের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রশিবির উত্তরের প্রচার সম্পাদক সালাউদ্দিন আকাশ গণমাধ্যমকে বলেন, “সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিশে হামলার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। পলিটেকনিক্যালে আমাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।”

চট্টগ্রাম নগর পুলিশ উত্তর জোনের উপ-কমিশনার (ডিসি) ফয়সাল আহমেদ গণমাধ্যমকে জানান, “আবাসিক হলের সিট বরাদ্দের পর হলে ওঠাকে কেন্দ্র করে ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। তবে এখন ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।”

এ ঘটনার বিষয় জানার জন্য চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রকৌশলী মো. ইয়াসিনের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

বর্তমানে শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বলে নিরাপত্তা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইনস্টিটিউটটিতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে বিদ্যাপীঠটিতে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে বলে জানা গেছে।

Facebook Comments Box

Posted ৩:৩৪ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪

bangladoinik.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

https://prothomalo.com
https://prothomalo.com

এ বিভাগের আরও খবর

https://prothomalo.com
https://prothomalo.com
সম্পাদক ও প্রকাশক
ফখরুল ইসলাম
সহসম্পাদক
মো: মাজহারুল ইসলাম
Address

2nd floor, Opposite building of Muradnagar Thana gate, Muradnagar-3540, Bangladesh

01941702035, 01917142520

bangladoinik@gmail.com

জে এস ফুজিয়ামা ইন্টারন্যাশনালের একটি প্রতিষ্ঠান। ভ্রাতৃপ্রতিম নিউজ - newss24.com