
সায়েদুল ইসলাম | বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই ২০২৩ | প্রিন্ট | 347 বার পঠিত
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশে রেকর্ড ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, গত সাড়ে ছয় মাসে মৃত্যু হয়েছে ১৪৬ জনের। এর আগে বাংলাদেশে বছরের প্রথম ছয় মাসে ডেঙ্গুতে এতো মৃত্যু হয়নি।
বছরের পর বছর ধরে বাংলাদেশে ডেঙ্গুর সংক্রমণ আর এই রোগের ভাইরাস আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠার পরেও সেদিকে নজর না দেয়ায় এই বছরে ডেঙ্গু মারাত্মক হয়ে উঠেছে বলে বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্যবিদরা মনে করছেন।
তারা বলছেন, এক সময়ে বাংলাদেশে ডেঙ্গু রোগটি মৌসুমি রোগ বলে মনে করা হলেও, গত কয়েক বছর ধরে সারা বছর জুড়ে প্রকোপ দেখা যাচ্ছে।
এর ফলে এই রোগের চার ধরনের ভাইরাস আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে এবং রোগটি দেশের সব জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে।
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড ১৯ জনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এই সময়ে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১৭৯২ জন। এর আগে কোন বছরের প্রথম ছয় মাসে ডেঙ্গুতে এতো মানুষের মৃত্যু হয়নি।
এই বছরের সাড়ে ছয় মাসেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মোট ১৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে আর আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২৫ হাজার ৭৯২ জন।
ডেঙ্গু পরিস্থিতি কেন এতো মারাত্মক হয়ে উঠলো?
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত কয়েক বছর ধরে অব্যাহতভাবে ডেঙ্গুর সংক্রমণ ঘটে চললেও সেদিকে তেমন গুরুত্ব দেয়া হয়নি। ফলে এই বছরে মৌসুমের আগে আগে সেটা প্রকট হয়ে উঠেছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার ডেঙ্গু রোগীদের অবস্থা খুব তাড়াতাড়ি অবনতি হচ্ছে।
মুশতাক হোসেন বলছেন, ‘’আসলে গত বছরের সঙ্গে এই বছরের মধ্যে ডেঙ্গু রোগী আসার ক্ষেত্রে কোন বিরতি ছিল না। শীতকালেও আমরা রোগী পেয়েছি। এবার মৌসুম শুরু হওয়ার এক দেড় মাস আগে থেকেই আমরা অনেক বেশি রোগী পাচ্ছি।‘’
বাংলাদেশে প্রথম ডেঙ্গু শনাক্ত হয় ১৯৬৫ সালে। তখন এই রোগটি ঢাকা ফিভার নামে পরিচিত ছিল। কিন্তু ২০০০ সালের পর থেকে রোগটির সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে।
‘’আক্রান্তদের মধ্যে ডেঙ্গুর চারটি ধরন বা সেরোটাইপ পাওয়া যাচ্ছে। যারা এখন আক্রান্ত হচ্ছে, তাদের মধ্যে দ্বিতীয় বার আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যাই বেশি। ২০০০ সালের আগে আগে আমরা দেখেছি, মানুষজন একটা ডেঙ্গুর একটা ধরনে আক্রান্ত হতো। ফলে তাদের মধ্যে একটা প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠতো। কিন্তু যখন মানুষ চারটা ধরনেই আক্রান্ত হতে শুরু করে, তখন প্রতিরোধ ক্ষমতা তেমন কাজ করে না। তখন সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি তিনগুণ বেড়ে যায়,’’ তিনি বলছেন।
সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা. রাশেদা সুলতানা বলেছেন, দেশে ডেঙ্গু সংক্রমণ পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ হচ্ছে। তবে প্রতিটি হাসপাতালেই এখন ডেঙ্গু কর্নার আছে। প্রতিটি হাসপাতালেই পর্যাপ্ত শয্যা প্রস্তুত রয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও আমরা চিকিৎসা দিতে প্রস্তুত আছি।
বাংলাদেশে গত বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৬২ হাজার ৩৮২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। মৃত্যু হয়েছিল রেকর্ড ২৮১ জনের। সেই বছরেও জুলাই, অগাস্ট মাসে ডেঙ্গুর সংক্রমণ অনেক বেড়ে গিয়েছিল।
তার আগের বছরেও ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা অনেক ছিল। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছিল ২০১৯ সালে।
(বিবিসি বাংলা থেকে সংগৃহীত)
Posted ৪:২৮ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই ২০২৩
bangladoinik.com | faroque
জে এস ফুজিয়ামা ইন্টারন্যাশনালের একটি প্রতিষ্ঠান। ভ্রাতৃপ্রতিম নিউজ - newss24.com