
মো: সাকিবুল ইসলাম স্বাধীন | বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫ | প্রিন্ট | 26 বার পঠিত
রাজশাহীতে প্রাণ-আরএফএল কর্তৃক রাজশাহী টেক্সটাইল মিলস এর শতাধিক বৃক্ষ নির্বিচারে হত্যা ও পুকুর ভরাট বন্ধ এবং রাজশাহীর বাগমারায় জোর জবরদস্তি পুকুর খননের প্রতিবাদ স্মারকলিপি প্রদান করার পরও প্রশাসনের বিএনপির সাথে সম্পর্ক বজায় রাখতে নীরব ভূমিকা থাকায় ৩ সংগঠন সহ বাঘমারাবাসী মানববন্ধন করে পুনরায় স্মারকলিপি প্রদান করে রাজশাহী সহ ঢাকার প্রধান দপ্তর গুলিতে। ১২ মার্চ (বুধবার) রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এর সামনে দুপুর ১২.০০ টায় ফ্যাসিবাদ বিরোধী সংগঠন জুলাই-৩৬ পরিষদ, বরেন্দ্র অঞ্চলের তরুণ-যুবদের বৃহৎ ঐক্য বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরাম ও সবুজ সংহতি রাজশাহী মহানগরের উদ্যোগে এ মানববন্ধন ও সরকলিপি প্রদান করা হয়। জুলাই-৩৬ পরিষদের মূখ্য সংগঠক ফয়সাল আহমেদ এর সঞ্চালনায় সভপতিত্ব করেন জুলাই-৩৬ পরিষদের আহ্বায়ক মাহমুদ জামাল কাদেরী।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, রাজশাহীতে নির্বিচারে বৃক্ষনিধন ও পুকুর ভরাটের পাশাপাশি রাজশাহীর প্রতিটা উপজেলায় কৃষি জমিতে অবৈধভাবে পুকুর খননের মহোৎসব চলছে। গত বছরের নভেম্বরে লিজ নিয়ে রাজশাহী টেক্সটাইল মিলসে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ প্রায় তিন শতাধিক বৃক্ষ নিধন করেছে এবং টেক্সটাইল মিলের ভেতরে অবস্থিত পুকুর ভরাট করেছে। যদিও গত ২৮ জানুয়ারি এক রিটের চূড়ান্ত শুনানিতে উচ্চ আদালত গাছ কাটার ক্ষেত্রে অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক করেছেন। কিন্তু প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ হাইকোর্টের আদেশকেও বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন করেছেন। কিন্তু সেখানের গাছগুলো রক্ষায় প্রশাসনের কোন উদ্যোগ চোখে পড়ে নি। অন্যদিকে, বিগত সময়ে বাঘমারার লীগের সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ শুরু করেছিল জমি দখল করে আইন অমান্য করে পুকুর খনন সেই জন্য জেলা বিএনপি তাকে ভেকু কালাম নামে পরিচিত করেছিল। বর্তমানে আ,লীগের এমপি কালামের ঐতিহ্য বহাল রাখছে সেই বিএনপির নেতাকর্মীরা।
বাগমারার প্রতিটা ইউনিয়নে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে পুকুর খনন চললেও এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের খোর্দ্দকৌর মৌজার নিমাই বিল। সেখানে কৃষি জমিতে রাতের অন্ধকারে পুকুর কাটছে স্থনীয় ভূমিদস্যুরা। তারা রীতিমতো ওই এলাকার বহু মানুষের জমি জোরপূর্বক দখল করেছে। কৃষকের ধান খেত নষ্ট করেছে। এক/দেড় মাসের মধ্যেই ফসল ঘরে তুলতে পারতো কৃষকেরা অথচ, তাদের জমি জোরপূর্বক দখলে নিয়ে রাতের আধাঁরে জমিতে স্কেভেটর মেশিন নামিয়ে সেই ধানক্ষেত নষ্ট করেছে। ভূমিদস্যুরা, খর্দ্দপুর মৌজার জেএল নং-৭২; খতিয়ান নং- ৫৭; দাগ নং- ৭৬,৭৭,২৪১,৩৩২,৩৬৫ এবং খতিয়ান নং- ৩০১; দাগ নং- ৭৮,৭৯,৩৩০,৬১৬,৬৭৯,১৮৩,২২৪ দাগের জমি জোরপূর্বক দখল ও ধানক্ষেত নষ্ট করেছে। প্রতিবাদ করায় তারা জমির মালিকদের প্রাণনাশের ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন।
এমনকি তাদের ফসলের সেচের পানি বন্ধ করে দেন। থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে থানার ওসি উল্টো ফ্যাসিস্টদের সহযোগী তকমা লাগিয়ে ভুক্তভোগী এক নারীকে গ্রেফতারের ভয় দেখান এবং তাদের দায়ের করা মামলা নিতে আপত্তি জানান। সেখানকার কৃষি জমির মালিকরা নিজ বাড়ি ছেড়ে গ্রাম ছাড়া ও আতংকিত। বাঘমারা থানার ওসি জেলা বিএনপির সাথে সম্পর্ক বজায় রাখতে হুমকির বিষয়ে অভিযোগ নিতে নারাজ হওয়ায় বাধ্য হয়ে নিরাপত্তার জন্য অনলাইন জিডি করার পরও আবারও হুমকির মুখে বাসা ছাড়া ভুক্তভুগী। উল্লেখ্য ভুক্তভুগী প্রথমে থানায় যাওয়ার পর প্রতিকার না পেয়ে ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ ও ডিসি অফিসে স্মারকলিপি দিয়ে হুমকির মুখে পড়ে।
এরপর সাংবাদিকের স্মরণাপন্ন হয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে বাধ্য হয়ে ইউএনও অভিযান দিয়ে ব্যাটারি জব্দ করলেও আবারও রহস্যজনক ভাবে ব্যাটারি খননকারীদের কাছে পৌছে যায়। বাগমারার বিষয়ে রাজশাহী পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলাম বলেছেন, থানা যেনো জনগণের জন্য কাজ করে কোন রাজনৈতিক দলের পক্ষ না নিয়ে সত্যের পক্ষে কাজ করে সেই বিষয়সহ তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে। রাজশাহী জেলা প্রশাসকের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ মহিনুল হাসান স্মারকলিপি গ্রহণ করলেও এই সমস্ত বিষয়ে পূর্বের স্মারকলিপি ও সংবাদ প্রকাশের পরও ব্যবস্থা না নেয়ার বিষয়ে কোনো বক্তব্য দেননি। এছাড়া মানববন্ধন শেষে ১০ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি রাজশাহীর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে পরিবেশ,বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস্ করপোরেশন এর চেয়ারম্যান ও পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে।
Posted ১২:৩০ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫
bangladoinik.com | Belal Hossain
জে এস ফুজিয়ামা ইন্টারন্যাশনালের একটি প্রতিষ্ঠান। ভ্রাতৃপ্রতিম নিউজ - newss24.com